রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আর অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মাঝেও ক্রিপ্টো বাজার আশ্চর্যজনকভাবে স্থিতিশীলতা দেখাচ্ছে। বিটকয়েন (BTC) আবারও $120,000 এর মানসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্তরে লড়াই করছে। বর্তমানে এর দাম দাঁড়িয়েছে $120,007 (+1.16%)। ইথেরিয়াম (ETH) ২.৬৮% বেড়ে $4,490 এ পৌঁছেছে এবং $4,500 এর গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধ স্তর স্পর্শ করতে চলেছে। অন্যদিকে, বাইন্যান্স কয়েন (BNB) ৬.৪৮% এবং সোলানা (SOL) ৩.৫৯% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা তাদের শক্তিশালী প্রবণতা নির্দেশ করছে।
ভয় ও লোভ সূচক (Fear & Greed Index) ৫৭ এ দাঁড়িয়েছে, যা নিরপেক্ষ মনোভাবকে প্রকাশ করছে। বাইন্যান্সে ২৩৮টি কয়েন লাভের মুখ দেখেছে, যেখানে ক্ষতির তালিকায় রয়েছে মাত্র ১৮৮টি। এটি প্রমাণ করে, বাজারে অতি উচ্ছ্বাস বা ভয়ের পরিবর্তে এক ধরনের সতর্ক আশাবাদ বিরাজ করছে।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কার্যকলাপ এই আশাবাদকে আরও মজবুত করেছে। শুধু বিটকয়েন ETF-এ ৬২৭.২ মিলিয়ন ডলারের প্রবাহ যুক্ত হয়েছে, যা মোট ১৫১.৩২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ইথেরিয়াম ETF-এও এসেছে ৩০৭.১ মিলিয়ন ডলারের নতুন বিনিয়োগ। এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়, বড় বিনিয়োগকারীরা রাজনৈতিক ও আর্থিক অনিশ্চয়তার সময়টিকে দীর্ঘমেয়াদি পজিশন গড়ে তুলতে কাজে লাগাচ্ছেন।
এদিকে, বাজারে একেবারে ভিন্ন চিত্রও দেখা যাচ্ছে। 2Z টোকেনের মূল্য ৯০০% এর বেশি লাফিয়ে উঠেছে, যা জল্পনামূলক বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এটি দেখায় যে, বড় বিনিয়োগকারীরা যখন ETF-এ মনোযোগ দিচ্ছেন, তখন খুচরা ট্রেডাররা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ কয়েন থেকে দ্রুত লাভের সন্ধান করছেন।
তবে মূল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের শাটডাউন। SEC এবং CFTC কার্যত স্থবির হওয়ায়, ETF অনুমোদনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক সিদ্ধান্ত পিছিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাজারে স্বল্পমেয়াদি অস্থিরতা বাড়লেও, কেউ কেউ মনে করছেন এটি উল্টে ক্রিপ্টোর জন্য ইতিবাচক—কারণ ঐতিহ্যবাহী আর্থিক কাঠামোর প্রতি আস্থা কমলে বিকল্প সম্পদের দিকে ঝোঁক বাড়তে পারে। ডলারের উপর সম্ভাব্য চাপও ক্রিপ্টোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলছে।
এমন পরিস্থিতিতে ট্রেডিং কৌশল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিটকয়েনের জন্য $120,000 একটি মূল প্রতিরোধ; এটি ভাঙলে নতুন গতির সঞ্চার হতে পারে। ইথেরিয়াম $4,500 অতিক্রম করলে শুধু ETH নয়, বরং পুরো অল্টকয়েন বাজারে (বিশেষ করে DeFi) শক্তিশালী র্যালি দেখা যেতে পারে। অন্যদিকে BNB এবং SOL ঋতুভিত্তিক প্রবণতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শক্তি দেখাচ্ছে। তবে 2Z-এর মতো অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ টোকেনে বিনিয়োগের আগে কঠোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা জরুরি।
কমিউনিটির মধ্যে এ নিয়ে নানা মতামত দেখা যাচ্ছে। কেউ মনে করছেন, শাটডাউন হয়তো ক্রিপ্টো গ্রহণকে ত্বরান্বিত করবে, আবার কেউ চিন্তিত অর্থনৈতিক চাপে তারল্য সংকট দেখা দিতে পারে। তবে সবাই একমত—বর্তমান বাজারের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে নিয়ন্ত্রক বিরতি, ডলারের গতিপথ এবং ETF প্রবাহ।
সব মিলিয়ে বলা যায়, রাজনৈতিক অচলাবস্থা ক্রিপ্টো বাজারে ঝড় তুললেও এখন পর্যন্ত বাজার নিজস্ব শক্তিতেই টিকে আছে। বরং, বড় ইনফ্লো, নিরপেক্ষ মনোভাব এবং গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল স্তরগুলো ভাঙার সম্ভাবনা ইঙ্গিত করছে—এই অনিশ্চয়তা হয়তো প্রতিবন্ধক নয়, বরং নতুন সুযোগের জন্ম দিচ্ছে।
#USGovernment #EFT #Market_Update